হঠাৎ করেই আমতৈল ইউনিয়নের সূর্যপাশা গ্রামের একটি বাড়ির কয়েকজন সদস্য ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে যান। আমার বন্ধু Rana Khan শাহীন অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। সে-ই আমাকে নোটিস করে প্রথমে। একটা আট বছরের শিশু যখন মারা যায় সিভিয়ার ডিহাইড্রেশনে।
রাতে পরিবারের একজন সদস্যা বাড়িরই এক পুরুষকে স্যালাইন কিনে আনতেও বলেন। কিন্তু তিনি তেমন কিছু হবেনা ভেবে আনেন নি। ফলটা তাই হয়ে আসে বেদনাতুর হয়ে। এরপর শিশুটির মা-ও আক্রান্ত হন। চরম পানিশূন্যতা নিয়ে তিনি ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু অনেক প্রচেষ্টার পরেও তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তাকে রেফার করা হয় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেলে। কিন্তু তিনি পথিমধ্যেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
গত দুদিন ধরে আমাদের বড় একটি মেডিকেল টিম কাজ করছে সূর্যপাশা গ্রামে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে নতুন কেউ আর আক্রান্ত হলেন কী না। দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যশিক্ষা, ওরস্যালাইন ও খাবার বড়ি।
আজ সরেজমিন পর্যবেক্ষণে আমিও যাই আরেকটি টিম নিয়ে।
গিয়ে, সকলের সাথে আলাপ করে যা বুঝলাম, বাড়ির সবচে বয়স্ক যিনি, তিনি একজন মহিলা। তিনি মারাত্মক রকমের সংস্কারপন্থী। টিকা দেওয়া, স্যালাইন খাওয়ানো- তিনি এসবের ঘোর বিরোধী। আর তার এই নেতিবাচক ভূমিকাই এই মর্মন্তুদ ঘটনার মূল অনুঘটক।
এছাড়াও বাড়ির পরিবেশ অত্যন্ত নোংরা। খানাখন্দ ও ভাগাড়ে ঠাসা। শিশু থেকে বয়োবৃদ্ধরা খালি পায়ে কাদা ছেনে হাঁটছেন। গরুছাগল, হাঁসমুরগীর মলে সমস্ত আঙিনা সয়লাব।
এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে বাড়ির শানবাঁধানো পুকুরঘাটে বসে পাশের বাড়ির আরও জনাকতক নারীপুরুষদের জড়ো করে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যশিক্ষা, স্যালাইন ও খাবার বড়ি দিয়ে আসলাম আজ।
আমাদের সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক Nitai Pada Das বাবু অদূরেই আরেকটি বাড়িতে আরেকজন বয়স্ক মহিলা আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানালেন। আমরা ছুটে গেলাম সেখানে। গিয়ে দেখি আইভি স্যালাইন চলছে। সেখানে আমরা রোগীকে সাথে নেওয়া 'সিপ্রোসিন' বড়িও খাইয়ে দিলাম। দিয়েও আসলাম এক কোর্স ঔষধ।
প্রয়োজনীয় ফোন নাম্বার দিয়ে আসলাম যাতে যে কোনো প্রয়োজনে তারা যে কেউ যে কোনো সময় আমাদের সহকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস