মৌলভীবাজারে কাজ করতে এসে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের বেশ কজন স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে আমার পরিচয় হয় যাদের সাথে আমার সম্পর্কটা হয়ে যায় এমন যে- আমি যখনই জল হয়ে এসেছি, উনারা লবনের মতো গলে গিয়ে মিশে গিয়েছেন আমার বিনম্র অভিস্রবণে, একাকার হয়ে।
এ যেন -
'অবশেষে মিললো এসে নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাস'!
তারা আমাকে বুঝেছেন, আমি তাদেরকে শুধু বুঝেছিই নয়, হৃদয়ঙ্গমও করেছি পুরোদস্তুর।
আজ আমাদের কমিউনিটি ক্লিনিক ভিজিট করবেন বলে এসেছিলেন বিদেশী সংস্থাগুলোর কয়েকজন শীর্ষ স্থানীয় ব্যক্তিত্ব- ফেদ্রা মুন মরিস, গ্যাব্রিয়েল ম্যাথু ও মায়া ভেনডেনেন্থ। সঙ্গে এসেছিলেন দেশীয় অফিসিয়ালরা।
আমরা দুটি ক্লিনিক তৈরী করে রেখেছিলাম। প্রথমটি ছিল 'বালিকান্দি সিসি'। এই তৈরির নেপথ্যে আমার আর আমার প্রিয় সিএইচসিপি Jesmin Monsur-এর হয়েছে অনেক আলাপ ও জল্পনাকল্পনা। এই কদিন প্রাণপণ খেটেছেন Shamsul Haque-সাহেব ও Radha Krishna Deb-বাবুরা। আর খেটেছেন আমার সেই বেসরকারি সংস্থার পরম সুহৃদরা।
বিদেশী হাই-প্রোফাইল অভ্যাগতরা আজ ভিজিট করেছেন ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, নার্সিং ইন্সটিটিউট। কিন্তু সর্বাপেক্ষা বেশী সময় বসেছেন আমাদের জেসমিনের ওখানেই, বালিকান্দি সিসিতে। তাঁরা মাত্রাতিরিক্ত 'ইমপ্রেসড্' হয়েছেন তার গতিশীল ও অনুপ্রেরণাময় কর্মকাণ্ডে, প্রেরণাদায়ক বক্তব্যে। তাঁরা চমৎকৃত হয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের অনন্যসাধারণ ব্যুৎপন্নের জন্য।
জেসমিনের এইযে উত্তরণ, তার নেপথ্যে কিন্তু রয়েছে আরো অনেকেরই অবদান। এখানকার জমিদাতার পরিবার, এখানকার মেম্বার, পার্শ্ববর্তী মানুষেরা- সকলেই একই তালে কাজ করে গেছেন দিনের পর দিন। সকলেরই কাঙ্ক্ষা ছিল এলাকার স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন।
আর যে সকল মানুষ নিরলে 'ধনাত্মক প্রভাবক' হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন, যাঁদের কথা বাইরের অনেকেই জানেন না, যাঁরা সবসময় আমাদের সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন পরম নিভৃতে- সেই তাঁরা- আমার সেই প্রিয় 'সুধীজন'। ধন্যবাদ যে তাদের প্রাপ্য। তাঁদের হার্দিক সহায়তা ও বিনম্র শ্রম আজকের হাই-প্রোফাইল ভিজিটের সামনে, বিদেশী সংস্থাগুলোর কর্তাব্যক্তিদের কাছে আমাদের ভাবমূর্তি প্রোজ্জ্বল করেছে যারপরনাই। তাঁরা হলেন Dr. Mirza Fazli Elahi, ডা.ফাতেমা শিউলি, ডা. সিদ্দিকি, Iftekhar Mahmud, ডা.রাফি, Dr. Md Salequzzaman Selim- প্রমুখ। এঁরা এমন একটা বাগানের মালী যেখানে সুগন্ধি-ফুল চাষ করতে আমাদেরকে অতখানি খাটুনি খাটতে হয় না।
আর সবার নেপথ্যে তাে আছেন আমাদের নম্রস্বভাবের সিভিলসার্জন স্যার Dr. Shahjahankabir Chowdhury.
আজ এই অভাবিত ও সাফল্যমণ্ডিত একটা ভিজিটের পরে আমি তাই সকলকেই জানাই হার্দিক শুভেচ্ছো ও লালসালাম।
বিদেশীরা আজ অন্তত জেনে গেছেন, আমরা আমাদের সামান্য সম্বল নিয়েও লড়ছি বীরযোদ্ধাদের মতো।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস